Puri Dham Experience
January 11 to January 15 2015
Visited Puri, Orissa, Chilka Lake, Orissa, Jagannath Temple, Puri and Bharat Sevashram Sangha
পুরি তে, সরগদারে সমুদ্রের ধারে শীত কম লাগছে। অনেক ভোরে
সমুদ্রে দূরে আলো টিম টিম করে জলছে নিভছে। সমুদ্রের জল খুব
পরিস্কার। তলা টা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। এখন সাড়ে সাতটা। মাঝে
ক্রেতা দের শঙ্খ ধ্বনি ভেসে আসছে। প্রচুর ভিড়। ঢেউ সেই আগের
মতই। এখনি সকালে অনেকেই চান করছে। সানন্দা আর ঈশানী
মায়ের সঙ্গে জলে হুল্লোড় করছে। আমার হাতু অব্দি ভিজে, দু একটা
উট যাচ্ছে। চটের কাজ করা ব্যাগ, শাখা্ জগন্নাথের ফটো ফ্রেম, চা
বিস্কুট সবি আছে। তবে ঢেউয়ের যে লম্বা সারি, টা তোলবার মত
শক্তিশালী ক্যামেরা এই মুহূর্তে নেই।
কয়েকজন নাক চেপে ডুব দিচ্ছে। আটটা বেজে গেল। সেই ভোর চাট্টে
তে পউছে ছি। ভারত শেবাশ্রমে। ওখানেই লাঞ্চ। ৪০ টাকা। সেবাশ্রমের
ছাত টা বেশ বড়, বিস্তৃত। সূর্য দয় দেখা যায়। উলটো দিকে জগন্নাথের
মন্দির। বারটা বাজতে কুপন নিয়ে আশ্রমে। পরিচ্ছন্ন বাসন খাবার পর
ধুয়ে দিতে হয়। ভাত, সিম আলু বড়ি চচ্চড়ি, সয়াবিন আলু, বাঁধা
কপির ঘ্যাঁট, টমেটো চাটনি প্রত্যেকটাই অতি সুসসাদু। খাবার সময়
মন্ত্র উচ্চারণ করছে প্রধান পুরহিত অথবা রাঁধুনি। প্রত্যেক মানুষের এখানে ব্যবহার কি মধুর! বাড়ি থেকে শুনলাম ওখানে বেশ ঠাণ্ডা।
১. শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে রোষ শালা বা রান্নাঘর, পৃথিবী তে সব চেয়ে
বড়, এমনটাই বলা হয়। রান্না ঘরের ভিতরে ঢোকবার অনুমতি নেই।
বাইরে থেকেই যত টুকু দেখা যায়। দল বল পাণ্ডা নিয়ে আসলে, এই
বাইরে থেকেই দেখতে পয়সা লাগবে।
এটা ঠিক কারখানার মত।
ছোটো ছোটো খোপ থেকে, উঁকি মেরে দেখলাম, গনগনে কাঠের
আগুনে মাটির উনুন খুপির ওপরে অনেকটা খেজুর রসের হাড়ির মত
সারি সারি হাড়ি। সবেতেই ভাত দাল তরকারি ইত্যাদি ফুটছে। হাতা
দিয়ে একটার রসঅন্য তে মিশিয়ে দিয়ে রান্না চলছে। আমরা হাড়ি,
প্রেশার কুকারের সাহায্যে ভাত করি। ফ্যান গালি। এখানে ফ্যান না
গেলেই শ্বেত শুভ্র ঝরঝরে ভাত। সুস্বাদু। গলি তে দেখলাম সার দিয়ে
কাঁকে করে খাবার নিয়ে, জগন্নাথ মন্দিরে ধুকে যাচ্ছে। এই রান্না ঘরের
আগুন কখনো নেভে না।
রথ যাত্রার সময় খাবার লোক লক্ষ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। আর এবার তো নব কলেবর। মানে। বারো বছর অন্তর
হয়। ঠাকুরের মূর্তি নতুন ভাবে নির্মাণ হবে। তাই রথ যাত্রার ৪৫ দিন
আগে থেকে মূল মন্দির বন্ধ থাকবে।
রান্নাঘর পেরিয়ে মুল মন্দিরের ডান দিকে, মানুষের সারি। সবাই
প্রাঙ্গনে ই বসে পড়েছে। এখন সন্ধে সাতটা। আমরাও তাদের দেখা
দেখি বসে পড়লাম। জানলাম পতাকা পরিবর্তন হবে। একজন
কাপড়ের পুটুলি নিয়ে পিঠে বেঁধে ধির স্থির স্টেপ বাই স্টেপ উঠে
যাচ্ছে। আমাদের উৎসাহের অন্ত নেই। উঠতে আর দুতলা মত বাকি।
প্রচুর লোকে জয়ধ্বনি দিচ্ছে, কেউ বা হাত তালি। ওপরে একটা চক্র
আছে, সেখানেই লাল অথবা হলুদ রঙের চন্দ্র সূর্য আঁকা ১৫-২০ ফুট
লম্বা পতাকা পরিবর্তন করা হয়, অত্যন্ত বিপদ জনক। পাশে শুনলাম
একজন বৃদ্ধ তার পরিবারের সদস্যদের বলছে, দেখ মা দেখ, কত পুণ্য
কল্লে, উপরে ওঠা লোক টাকে , ভগবান তার মাথার উপর ওঠার
সৌভাগ্য দিয়েছেন। পরে জেনেছি যে কেউ এই বিপদ জনক কাণ্ড
করতে পারে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ট্রাস্টের অনুমতি ও অনুদান
দিয়েই সম্ভব। যাই হোক, সেই অনাম্নি লোক সাফল্লের সঙ্গে পতাকা
পরিবর্তন করে দিল।
এখানে মূল মন্দিরের শ্রী জগন্নাথ কে দর্শন করতেও আলাদা করে
কুপন কাটতে হয়। ২৫ টাকা। এখন চারিদিকে পাণ্ডা রা টিকিট ব্ল্যাক
করছে। ১০০ টাকা মাত্র। কামেরা, মোবাইল, কোনও নেশার দ্রব্বের
প্রবেশ এখানে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।
পুজো দিতে ২৫১,১৫১,১৬১, ১০১
টাকার ডালা পাওয়া যায়। আমি ৬১ টাকার ডালার জুগাড় করলাম।
৩০ টাকা প্রনামি আর ডালা টা নিয়ে পুজো দিতে গিয়ে যে কি ভুল
করিছি সয়ং শ্রী জগন্নাথ বলতে পারবে। ভাল মূল্য নিয়ে আসলে তবেই
পাণ্ডারা তাঁর কাছে যেতে পুজো দিতে পারবে।
মাঝে মাঝে হাসি পেয়ে যায়। দেশে বেশির ভাগ মানুষের ১০ ২০ টাকা দেওয়া টাও অনেক অনেক কষ্টের ব্যাপার। আর মন্দির ভগবান সব তাদের কে উদ্দেশ্য করেই, আর এখানে? দিন দুখীদের দূরে সরিয়ে রেখেছে। ময়লা ফেলছে পেছনে, উচ্ছিষ্ট, রান্নার পুতিগন্ধময় জলের নালা তিন দিক ঘেরা।
অনেক ভাল ভাল ব্যাপার হয়েছে, জাতীয় বালি উৎসব, বিরিয়ানি, ছানা পোড়া, খাজা খাওয়া। তবে এখানে রসগোল্লা এতো সুন্দর লাগল না খেলে, কি নরম মোলায়েম অপূর্ব স্বাদ। বালির তলায় সুয়ে থাকা, প্রচুর প্রচুর চান, ঢেউয়ের গায়ে গা ভাসিএ দেওয়া, মোমেন্টও সংগ্রহ করা, মন্দিরে পাথরের কাজ দেখা, বই পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
Contact me, if you need high resolution pictures or any support regarding your print, events or anything in urgent.
No comments:
Post a Comment