- এইতো আতপুরেই - (সব চরিত্র কাল্পনিক - ৪)
ভোরবেলায় চন্দরনগর - এঘাট হতে আতপুরে সুর্য্য-দয় বড়ই মসৃন পেলব দেখায় গো। ভালো লাগার জীবন কথায় অদৃশ্য থাকে। তবু যেন কোথাও লেপ্টে থাকা এক মধুর মুহুর্তের আলোর ছটায় ধিরে ধিরে আকাশ ছেয়ে এ আলো - গাছ, রাস্তা, নদী, পাখি সকলের মধ্যে মিশে যেতে চায়। এই আলো ফুটছে যখন, কালি বাড়ির ঘন্টায় তখন ঢং ঢং করে শব্দ, দূর হতে বেশ মিষ্টি শোনায়। মনে চলে উথালি পাথালি। আমায় ভাসায় বি রে আহা।
শ্যামনগরের (সামনে গড়) প্রসন্ন কুমার ভট্টাচার্য পন্ডিত লোক বটে। তবে কিনা রাগী বেজায়। বদ মেজাজি তো ছিলই। লোক তো কত কথাই বলে অত কান পাতলে, দিন যাপন বৃথা। সব লোকে কয় লালন, তবে কিনা, কলেজে একটু দেরী হলে কারো নিস্তার টি নেই গো। তাঁর সেই বাজখাঁই গলায়, সব যেন থরহরিকম্প। এইরে একটু হলেই দিলেন কানটি মুলে কিম্বা সমূলে। আক্কেলগুড়ুম আর কাকে বলে বলতো!
কালি কিংকর মিত্র তায় আবার এক কাঠি বাড়া। সরু লিকলিকে একটা বেত নিয়ে কলেজ ঘরের এক প্রান্ত থেকে শেষ বারান্দায় যখন হেটে ফিরে আসতেন, কারফিউ নেমে যেত। বিশ্ব্যেস হয় না, বেশ, তবে যাই বল না কেন উপ্রি গাম্ভীর্যপূর্ণ আস্তরনের নিচে কোথাও যেন লুকিয়ে থাকে অকৃত্তিম বন্ধু বত্সল দরদ তথা সরলতা। দুপুর গড়ালে পর, তার অতি প্রিয় মিত্র আক্যান্ন্ত বলতে পারো, বিদ্যাসাগর মহাশয় কে ঝোলা থেকে মুড়ি নারকেল কখনো বা চিড়ে গুড় শালপাতার ঠোঙায় দিতেন আর জুড়ে দিতেন নানা অকাজ কাজের গল্প। তায় আবার বিদ্যাসাগর মহাশয় গাল খুলে যখন দাঁত বের করে হাসতেন, সে এক দেখবার মত বিষয় অবিশ্যি। মুড়ি চিবুতে চিবুতেই বলতেন, আর বোলো না, কি কান্ড বলোতো হ্যাঁ। নিয়োগী পাড়ার পেছনে থাকে ওই যে হারানের পোলাটা, সাত সকালে বলে কিনা, এ দুটি ইলিশ মাস আপুনারে নিতেই হবে। এই বলে দিলুম হ্যা। নইলে এ ঘাট থেইক্যা আমার নৌয়ার খুটা খানি খুলে ফেল্মুনি, বলে দিলুম কত্তা। তা কালি পন্ডিত বললেন, আহা ওরা যে আপনারে স্নেহ করে। আর নিতেই বা এতো আপত্তি, কেন শুনি? সেবার আপনার বউঠান রেঁধে দিল, বলেন তো? এই বলে কালি পন্ডিত মিছে রাগ দেখায়। সাগর ও কপট কয়, আহা কালি ব্যাপার টা বুঝলে কিনা, অশুচ যে এখুনো কাটে নি হে। বাদ দাও তো অহন ওকথা। কাজের কথায় ফিরা আইসো। আসছে বছর আবার হবে। এই বলে এক গাল হেসে দিলে। এবার উঠি কালি, কেমন! আতপুরে আবার একটা বিদ্যালয়ের উদ্বোধন আছে। পন্ডিত কে বলা আসে। দেহ ইটার লিগ্গা আবার সিল্লা মিল্লি না করে। চলি।
বিষ্টু পন্ডিত ইশ্ব্রর চন্দ্র মহাশয় কে বড়ই শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। বয়স কম তো কি, কারো ধারে ভারে থাকে না। এমন দশ বিশটা এ বাংলা পেলে. . . আহা। অনেক ধরে বেধে তবে না। আর শুনেই যে রাজী হয়ে গেলেন। এটাও তো বটে। আর সংস্কৃত টা উঠেই যাচ্ছে বলতে গেলে। ওদিকের মহান প্রিন্স ইংরিজি, ফারসি কি সব আউড়াচ্ছেন। পাক্কা ব্যাবসায়ী বললেও কম বলা হয়। এই হাঁ ঘরের পোলাপান গুলা কোথায় যাবে কেউ ভেবে দেখেচে? এসব ভেবে বিষ্টু পন্ডিতের মন ভিজে ওঠে। তবু সামর্থ্য অনুযায়ী চলতে হবে যে। এত দিনে দুটো মাত্তর ঠাকুরের দেখা পেলেন। এক দর্পনারায়ণের যোগ্য সন্তান গোপি মোহন ঠাকুর। আরেক টা এই ঈশ্বর পন্ডিত। আজ পুর্নিমা। এইতো কদিন পরেই বোশাখ শেষে মা ব্রম্ভময়ী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস।
চলবে.. .
#Athpur ##আতপুর
#শ্যামনগর #জয়দেবঘোষেরবাগান #রাজবাড়ীরমাঠ #shyamnagar
এটুকুই বলবার যে, ছবি গুলো মানান সই হয়েছে কিনা তা পাঠকের হাতে, তবে তুলেছেন এই পোস্টদাতা
ভোরবেলায় চন্দরনগর - এঘাট হতে আতপুরে সুর্য্য-দয় বড়ই মসৃন পেলব দেখায় গো। ভালো লাগার জীবন কথায় অদৃশ্য থাকে। তবু যেন কোথাও লেপ্টে থাকা এক মধুর মুহুর্তের আলোর ছটায় ধিরে ধিরে আকাশ ছেয়ে এ আলো - গাছ, রাস্তা, নদী, পাখি সকলের মধ্যে মিশে যেতে চায়। এই আলো ফুটছে যখন, কালি বাড়ির ঘন্টায় তখন ঢং ঢং করে শব্দ, দূর হতে বেশ মিষ্টি শোনায়। মনে চলে উথালি পাথালি। আমায় ভাসায় বি রে আহা।
শ্যামনগরের (সামনে গড়) প্রসন্ন কুমার ভট্টাচার্য পন্ডিত লোক বটে। তবে কিনা রাগী বেজায়। বদ মেজাজি তো ছিলই। লোক তো কত কথাই বলে অত কান পাতলে, দিন যাপন বৃথা। সব লোকে কয় লালন, তবে কিনা, কলেজে একটু দেরী হলে কারো নিস্তার টি নেই গো। তাঁর সেই বাজখাঁই গলায়, সব যেন থরহরিকম্প। এইরে একটু হলেই দিলেন কানটি মুলে কিম্বা সমূলে। আক্কেলগুড়ুম আর কাকে বলে বলতো!
কালি কিংকর মিত্র তায় আবার এক কাঠি বাড়া। সরু লিকলিকে একটা বেত নিয়ে কলেজ ঘরের এক প্রান্ত থেকে শেষ বারান্দায় যখন হেটে ফিরে আসতেন, কারফিউ নেমে যেত। বিশ্ব্যেস হয় না, বেশ, তবে যাই বল না কেন উপ্রি গাম্ভীর্যপূর্ণ আস্তরনের নিচে কোথাও যেন লুকিয়ে থাকে অকৃত্তিম বন্ধু বত্সল দরদ তথা সরলতা। দুপুর গড়ালে পর, তার অতি প্রিয় মিত্র আক্যান্ন্ত বলতে পারো, বিদ্যাসাগর মহাশয় কে ঝোলা থেকে মুড়ি নারকেল কখনো বা চিড়ে গুড় শালপাতার ঠোঙায় দিতেন আর জুড়ে দিতেন নানা অকাজ কাজের গল্প। তায় আবার বিদ্যাসাগর মহাশয় গাল খুলে যখন দাঁত বের করে হাসতেন, সে এক দেখবার মত বিষয় অবিশ্যি। মুড়ি চিবুতে চিবুতেই বলতেন, আর বোলো না, কি কান্ড বলোতো হ্যাঁ। নিয়োগী পাড়ার পেছনে থাকে ওই যে হারানের পোলাটা, সাত সকালে বলে কিনা, এ দুটি ইলিশ মাস আপুনারে নিতেই হবে। এই বলে দিলুম হ্যা। নইলে এ ঘাট থেইক্যা আমার নৌয়ার খুটা খানি খুলে ফেল্মুনি, বলে দিলুম কত্তা। তা কালি পন্ডিত বললেন, আহা ওরা যে আপনারে স্নেহ করে। আর নিতেই বা এতো আপত্তি, কেন শুনি? সেবার আপনার বউঠান রেঁধে দিল, বলেন তো? এই বলে কালি পন্ডিত মিছে রাগ দেখায়। সাগর ও কপট কয়, আহা কালি ব্যাপার টা বুঝলে কিনা, অশুচ যে এখুনো কাটে নি হে। বাদ দাও তো অহন ওকথা। কাজের কথায় ফিরা আইসো। আসছে বছর আবার হবে। এই বলে এক গাল হেসে দিলে। এবার উঠি কালি, কেমন! আতপুরে আবার একটা বিদ্যালয়ের উদ্বোধন আছে। পন্ডিত কে বলা আসে। দেহ ইটার লিগ্গা আবার সিল্লা মিল্লি না করে। চলি।
বিষ্টু পন্ডিত ইশ্ব্রর চন্দ্র মহাশয় কে বড়ই শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। বয়স কম তো কি, কারো ধারে ভারে থাকে না। এমন দশ বিশটা এ বাংলা পেলে. . . আহা। অনেক ধরে বেধে তবে না। আর শুনেই যে রাজী হয়ে গেলেন। এটাও তো বটে। আর সংস্কৃত টা উঠেই যাচ্ছে বলতে গেলে। ওদিকের মহান প্রিন্স ইংরিজি, ফারসি কি সব আউড়াচ্ছেন। পাক্কা ব্যাবসায়ী বললেও কম বলা হয়। এই হাঁ ঘরের পোলাপান গুলা কোথায় যাবে কেউ ভেবে দেখেচে? এসব ভেবে বিষ্টু পন্ডিতের মন ভিজে ওঠে। তবু সামর্থ্য অনুযায়ী চলতে হবে যে। এত দিনে দুটো মাত্তর ঠাকুরের দেখা পেলেন। এক দর্পনারায়ণের যোগ্য সন্তান গোপি মোহন ঠাকুর। আরেক টা এই ঈশ্বর পন্ডিত। আজ পুর্নিমা। এইতো কদিন পরেই বোশাখ শেষে মা ব্রম্ভময়ী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস।
চলবে.. .
#Athpur ##আতপুর
#শ্যামনগর #জয়দেবঘোষেরবাগান #রাজবাড়ীরমাঠ #shyamnagar
এটুকুই বলবার যে, ছবি গুলো মানান সই হয়েছে কিনা তা পাঠকের হাতে, তবে তুলেছেন এই পোস্টদাতা
No comments:
Post a Comment