দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেই ৭৪ বছর আগের মাহেন্দ্রক্ষণ ফিরে এলো, সেই মহাসন্ধিক্ষণ। শৌর্য বীর্যের প্রতীক তারা, যারা আমায় মুক্ত মাটি দিয়েছে। শত হাজার মা বোন মানব পৌরুষের হাত ধরে এ দেশ পরাধীনতার কলংক থেকে মুক্তি পেয়েছে।
এ সেই মুক্তির দেশ। যেখানে
কবি প্রার্থণা কবিতায় লিখেছেন,
চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
.....
ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত॥
কত ত্যাগ, তিতিক্ষা, রক্ত, মুক্ত মাটির গন্ধ নিয়ে সেই শুক্রবার, ১৩৫৪ এর ৩০ শে শ্রাবণ। তাই আজ বড় খুশীর দিন। আরেকবার শপথ নেবার দিন।
দেশ তথা দেশের মানুষ কে ভালো রাখা, সকল কে সুরক্ষিত রাখার দিন। তার সঙ্গে মানুষকে বিশেষ ভাবে আগে অর্থনৈতিক, সামাজিক সচেতন করার দিন।
তাই চাই সঠিক স্বাধীন তথ্য।
সাথে করোনার পথ্য। আমরা মন্দির মসজিদ, গুরুদ্বোয়ারা, চার্চ দেখেছি। সেখানের পরিচ্ছন্নতা সমাজেও ছড়িয়ে পড়া দরকার। ওখানে মানুষ তাড়াহুড়ো করে না। চেঁচিয়ে কথা বলে না। মনে হয় যেন আগাপাশতলা পরিচ্ছন্নতাই পুজোর সমান। দোয়ার সমান। আমেন।
সাথে এ দেশ বিবিধের দেশ। বৃহত্তম গনতন্ত্রের দেশ। কত রাজ্য, বিচিত্র চরিত্রে প্রত্যেকে একে অপরের অনন্য। তারই মর্যাদা এ স্বাধীনতায় প্রকৃত বন্দেমাতরম।
সাথে এ বছর কাজের ক্ষেত্রে যে চুড়ান্ত অপ্রতুলতা তা আর লোকানোর বিষয় নয়। কে কোথায় কি ভাবে স্বাধীনতায় বেঁচে থাকার গল্প লিখছে, কি চূড়ান্ত ভাবে লড়াই করে চলেছে, সেগুলোও মনে রাখার দিন। গত ৬/৭ মাস ধরে তিল তিল করে যা ঘটে গেল, সেখানে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলার দিন বললেও অত্যুক্তি হবে না।
আর মানুষের অবদান তা খাদ্য বস্ত্র রক্ত দান হোক দিকবিদিক বিপদের মধ্যেও প্রাণসংশয় করে পৌঁছে যারা গেল, তাদেরো ভুলিনি, ভুলছি না, ভুলতে আমি পারবো না। এবছর টাই তো ভুলবো না।
ভোলা উচিত না ডাক্তার, নার্স, সহস্র বেসরকারি সংগঠন তথা নেতা নেত্রী দের দিনরাত্রি এক করে পাশে থাকার দিন গুলো। সেই ঝড় জল, ফিরে আসা শ্রমিক দের লড়াই আরো কত যে কি কি আছে।
আবার এটাও ঠিক যে এতোটা সিরিয়াস ভাবে কখনোই ভেবে দেখার সুযোগ হত না, যদি না লক ডাউন হত। যে তীব্রতর ভাবে ছুটে হাঁপিয়ে গাড়ি, মানুষ চলছিল, সেখানে রাশ টানা গ্যাছে। উল্কার গতিতে সবকিছুকে পেতে চাওয়ার তাড়নায়, লক্ষে পৌছানোর আগেই যে সহজ প্রাকিতিক সম্পদ কে কত তাড়াতাড়ি যে ধ্বংস করার খেলায় মেতে উঠেছি, সেগুলোও ভাবিয়ে তুলেছে।
সাথে সাথে
খনিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, জল, বাতাস রক্ষার উদ্দেশ্যে সোলার প্যানেল গড়া অতীব মহৎ উদ্দেশ্য, তারই সাথে এতগুলো কয়লাখনি একযোগে কয়লা তুলবে তাও অভাবনীয়।
তার সাথে ভেবে দেখা জরূরী এন আর সি, এন পি আরের মত সংবেদনশীল বিষয়আশয়। বৃহৎ ও বিশাল জনসংখ্যার দেশে সামান্য ভূলের কারণে অনেক বড় প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়। কেউ যেন কোথাও তার বাপ ঠাকুরদার কথা মনে করে এমন কোনো স্বাধীনতা দিবসের দিনে চোখের জল না ফেলে।
শুনেছি 'জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।' ধর্ম বলতে এর চেয়ে আর কি.. তবে
এবার সময় এসেছে অর্থনীতি, কাজের ক্ষেত্রেও কেও সামান্য বুঝে নেবার, কিসে আমার ভালো, জগতের ভালো তা আরো পরিষ্কার হোক, পরিচ্ছন্ন হোক, সেটাই আমাদের মিলবার শর্ত হোক। ব্যক্তি স্বাধীনতার সাথে সামাজিক স্বাধীনতার অর্থ খোঁজা আজ বেশি অর্থবোধক।
সেই কবে আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরশীল হয়েছি, তথাপি, অপুষ্টি আর ৫০ শতাংশ মানুষের কপালে দু বেলার আহার নিয়ে প্রশ্ন, স্বাধীনতার কপালে ভাঁজ ফেলতে যথেষ্ট। খাবার যদিওবা জোটে, তাও সন্মানের কিনা সেটাও ভেবে দেখার দিন। তাই বন্টন ব্যবস্থায় আমাদের সাফল্য পেতে প্রশাষনিক চেন আরো মজবুত ও স্বচ্ছ হওয়া দরকার। আসলে প্রত্যেকের সামান্য কিছু অবদানেই দেশ এগিয়ে যাবে।
আবার অনেক রোগ, দূর্ভোগ, বন্যা, ক্ষরা, ঝড়ের মধ্যেও আমি বেঁচে আছি। কেমন আছি? এতে কষ্ট পায় যারা, তাদের কি পাশে আছি? স্বাধীনতার স্বাদ নইলে যে পানসে, যদি না ভাবি কত টা আছি? যে আজো কষ্ট পায়, সে কি আমার কথা মনে রেখেছে? এ স্বাধীনতা তাদের কেই বিনীত চিত্তে উৎসর্গ।
তারই সাথে আজকে দেশের সৈনিক, চাষি ভাই, সকল প্রশাষনিক কর্তা ও রাজনৈতিক নেতা নেত্রী সহ সকল স্বরনীয় ও বরণীয় কাজের মানুষ কে আমার নতমস্তকে প্রণাম।
আমরা জনসংখ্যায় দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এর নিয়ন্ত্রণও আশু প্রয়োজন। ১৯১৯ সালের পর আমেরিকা নিজের দেশের জনসংখ্যা নিয়ে ভেবে ছিল। আমাদেরও পুনরায় তা বিবেচনার দিন।
এটাও ভেবে দেখার দিন ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় ডিজিটাল শিক্ষায় কেউ যেন বিভাজনের শিকার না হয়। আর মানুষ ভালো পরিবেশ পেলে, অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়। আমাদের ভেবে দেখা কর্তব্য আমাদের দেশ সত্যি আজো সে অর্থে যোগাযোগের মাধ্যম, তথা ডাক্তারের অত্যাধুনিক যন্ত্র উৎপাদনে পরাধীন। এই যে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মুহুর্মুহু ব্যাবহার, ডেটার আদান প্রদানে নির্ভরশীলতা তা থেকেও মুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
এনক্রিপ্টেড ব্যাপারটাই তো সিক্রেট কিছু যা আজো ক্লিয়ার নয়।
আমি দেখেছি টেলিভিশানে কত শত চ্যানেল। সব চেয়ে বেশি ধার্মিক আর মনোরঞ্জনের চ্যানেল। শত শত। সব বেসরকারি। আর একটা চ্যানেল চালাতে কোটি কোটি টাকার খরচ। এ নিয়েও ভাবনার অবকাশ রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মাথা তুলে দাঁড়াতে এগুলোও বাধা নয়তো। হতেও পারে। জানি না।
ভাবনার অবকাশ আছে মিডিয়া নিয়ে, খবর নিয়ে কোনটা চলছে, কেন চলছে, কে চালাচ্ছে, সামগ্রিক ভাবে দেশের মানুষের উপকার হচ্ছে নাকি অন্য কিছু। ভাবতেই হবে, যেগুলো সামান্য কিছু লিখে দেওয়া গেল দেশের জন্য এগুলো জরূরী কিনা?
আসলে উদ্দেশ্যগত দিক ধনাত্মক হলে, মিডিয়া কেও মুক্তির স্বাদ দিতে হবে।
আশা করি ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন।
সাথে
সকল শুভানুধ্যায়ী কে স্বাধীনতার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রনাম। 🇮🇳